প্রেমিক প্রেমিকার মৃত্যু হতে পারে , ভালোবাসা অমর রয়ে যায়
{< মনের মত ভালোবাসা>}
গল্পটা পড়ুন,,,, ,,,,,,,,
ছেলে টা একটা স্কুলের শিক্ষক, নাম আবির। মা বাবা আর ছোট বোন টা থাকে গ্রামের বাড়িতে।
চাকরি করে নিজের পড়াশুনার খরচ চালায় আর মা বাবাকেও টাকা পাঠায়। এক কথায় বলতে গেলে সুখেই আছে।
এক দিন বিকেলে একটা কোচিং সেন্টারের বারান্দায় চোখ আটকে যায় আবিরের। একটি মেয়ে অন্য একটি মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
এত সুন্দর মেয়ে এর আগে কখনও চোখে পড়েনি আবিরের.....
আবির মনে মনে লজ্জিত হয়ে সেখান থেকে চলে গেল, কিন্তু মেয়েটির মুখটা কিছুতেই ভুলতে পারল না!
পরের দিন আবার গিয়ে দাঁড়ালো সেই কোচিং সেন্টারের কাছে।
গিয়ে দেখে মেয়েটা একা একা দাঁড়িয়ে কাঁদছে......
সাহস করে আবির কাছে গেল, গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল।
মুনা ওকে দেখেই ভয় পেয়ে যায়।
কারণ মুনা জানে ও এক জন শিক্ষক।
মুনা চলে যেতে চায়, কিন্তু আবির ওকে বলে ও কেন কাঁদছে....
প্রথমে মুনা বলতে চায় না, কিন্তু আবিরের অনুরোধ এ বলে....
মুনার বাবা নেই, ওর মা দর্জির কাজ করে সংসার চালায়।
আত্নিয় স্বজন আছে অনেক ধনী, কিন্তু তারা ওদের খোঁজ নেয় না।
এই পৃথিবী টা ওর কাছে অন্ধকার লাগে,,,,,ওর মা অনেক কষ্টে ওকে পড়াশোনা করাচ্ছে।
কিন্তু সামনে এস এস সি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ।
অনেক টাকার প্রয়োজন, কিন্তু মুনার মায়ের কাছে এত টাকা নেই।
ওর হয়ত আর পরীক্ষা দেয়া হবে না,,,,, কিন্তু ও আরো পড়তে চায়।
আবির ওর সব কথা শুনলো, তার পর ওকে বলল আবিরকে ওদের বাসায় নিয়ে যেতে।
মুনা আবিরকে ওর মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, মা আবির কে দেখে খুব খুশি হলো।
কারণ তিনি তার মেয়ের জামাই বানানোর জন্য যেমন ছেলে খুঁজছিল, আবির তেমনই।
কিন্তু মুনার মনে এমন কিছুই নেই।
আবির ওদের বলল, ওদের যদি কোন আপত্তি না থাকে তবে আবির মুনাকে পড়াবে।
আর মুনার পড়ার খরচ দেবে।
শুরুতে ওরা মানতে চাইল না, কিন্তু পরে রাজি হয়ে গেল।
কারণ পৃথিবিতে বেঁচে থাকতে হলে সবারই একটা অবলম্নন দরকার, আবির না হয় তাই হলো।
আবির রোজ সন্ধ্যায় পড়াতে আসতো, মুনা খুবই ভাল ছাত্রী ছিল।
সব পড়াই মন দিয়ে পড়ত, আর মন দিয়ে বুঝতো।
পড়া ছাড়া অন্য কোন দিকে মন ছিল না মুনার, মাঝে মাঝে নিজের হাতে এটা ওটা রাঁন্না করে খাওয়াতো ও আবিরকে।
আর আবির সেই ছোট্ট মেয়েটার প্রেমে ডুবতে লাগল অল্প অল্প করে.....
দেখতে দেখতে পরীক্ষা চলে এলো, আবির প্রতিদিন মুনাকে হলে নিয়ে যেত, আর পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে থাকতো।
তত দিনে আবির মাস্টার্স শেষ করে, ভালো একটা ফার্মে চাকরি পেয়ে যায়।
মুনার জন্য সে প্রতিদিন ছুটি নিতো, কারণ পরীক্ষা শেষে বাইরে বেরিয়ে শুধু আবিরকেই খুঁজতো মুনার চোখ দুটো.....
দুজন মিলে বাইরে খাওয়া দাওয়া করে মায়ের জন্য খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরতো ওরা।
দেখতে দেখতে দুজন দুজনার খুব কাছে চলে এলো, আবিরের চোখের মায়া মুনাকে শুধু টানতে থাকে ওর দিকে....
আর আবিরও অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে মুনার দিকে, কিন্তু কিছু বলে না।
হঠাৎ একদিন মুনাকে দেখতে একজন মহিলা আসে, তার ছেলের বউ বানাবে।
মুনার মনটা খারাপ হয়ে যায়,,,,,কারণ সে এত দিনে আবির কে অনেক ভালোবেসে ফেলছে।
কিন্তু ও তো কখনও আবিরকে সেটা বলতে পারবে না, কারণ ওরা গরিব।
আর আবির ওদের জন্য এত দিন যা করেছে তাতে আবিরের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ ওরা।
আর এই কথা আবিরকে জানালে আবির ওকে খুব খারাপ ভাববে।
তাই মুনা আর বলে না, মনে মনে খুব কষ্ট পায়। কিন্তু বিয়েতে রাজি হয়ে যায়।
ছেলের মা ওকে খুব পছন্দ করে আংটি পড়িয়ে যায়।
এক সপ্তাহ পর বিয়ে....
ওরা ছেলেকে দেখে নি, ছেলে নাকি খুব ব্যস্ত তাই আসতে পারবে না।
মুনার খুব রাগ হলো, তাই ছবিও দেখল না আর।
কিন্তু মুনার মা দেখল......
বাসর ঘরে মুনা একা,,,,, চারিদিক নিরব নিস্তদ্ধ।
কোনো মানুষ নেই, অনেক বড় একটা ঘর সুন্দর করে সাজানো।।
ফুলের গঁন্ধে চারিদিক মৌ মৌ করছে....
দেখে খুব ভালো লাগছে মুনার, কিন্তু আবিরের কথা মনে হতেই মুখটা কালো হয়ে গেল ওর।
চুপটি করে বসে রইল।
একটু পরে দরজা খোলার আওয়াজ হলো, মুনার বুকের ভেতর টা ধক করে উঠল!
লোক টা এসে পিছন থেকে ওর চোখ চেপে ধরল,,,,,ও কিছুই বুঝতে পারল না!
আস্তে আস্তে ওকে খাট থেকে নামিয়ে নিয়ে গেল, চোখ থেকে হাত টা সরাতেই মুনার চোখ মুখ চকচক করতে লাগল,,,,,
সে এ কাকে দেখছে! এ তো আবির....! মুনা কিছু বলতে পারল না, চোখ থেকে আনন্দের অশ্রু ঝরছে!
ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার আনন্দ,,,,,একান্ত কাছে।
আবির এবার মুনাকে কোলে নিয়ে খাটে বসাল, সারপ্রাইজ টা কেমন হলো জানতে চাইলে মুনা ওকে জরিয়ে ধরে শুধু কাঁদলো আর বলল,,,,,এমনটা কেউ করে?
এভাবেই ওদের সুখের সংসার চলতে লাগল।
অনেক বড় ফ্লাটে মাত্র দুজনার মিষ্টি সংসার।
মুনা আবির কে অনেক ভালোবাসতো, সম্মান করতো।
আবির মুখ থেকে কিছু বের করার আগেই মুনা সেটা এনে হাজির করত।
আর আবিরও মুনার প্রেমে অন্ধ ছিল, মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করত এমন বউ পাওয়ার জন্য।
মুনার এস এস সি রেজাল্ট খুব ভালো হলো, আবির ওকে ভর্তি করাতে চাইল কিন্তু মুনা আর ভর্তি হলো না।
ওর অনেক স্বপ্ন একটা বাচ্চার মা হয়ে, আনন্দে সংসার করবে।
আবিরও আর জোর করে না, কারণ স্বামী হিসেবে আবির মুনার কোনো অভাব রাখে নি।
এক দিন আবিরের জন্মদিন ছিল, সে দিন মুনা ওকে বলে দিছে ও যেন একটু তারাতারি আসে।
আবিরও বলছে যত তারাতারি সম্ভব ও চলে আসবে.....
মুনা আবিরের সব পছন্দের খাবার রাঁন্না করল, সুন্দর করে ঘর টা সাজালো।
আর আবিরের পছন্দের শাড়ীটা পড়ল।
কিন্তু আবির আসছে না!
মুনা ফোন দিল, আবির ফোন ধরল না!
আশ্চর্য,,,,বিয়ের এত দিন হলো কখনও এমন হয় নি।
আবির যত ব্যস্তই থাকুক মুনার ফোন সে ধরবেই।
কিন্তু আজ বার বার ফোন দেয়ার পরও ধরছে না।
মুনার খুব চিন্তা হতে লাগল....
অস্থির হয়ে যাচ্ছে ও।
শীতের মধ্যেও ঘেমে উঠছে বার বার।
হঠাৎ আবিরের নাম্বার থেকে ফোন আসে, মুনা রিসিভ করতেই দেখে অন্য একটা ছেলে!
বলে আবির অফিস থেকে ফেরার সময় আ্যক্সিডেন্ট করছে, হাসপাতালে নেয়া হইছিল সামান্য আঘাত পাইছে, এখন বাসায় আসছে।
মুনার হাত থেকে ফোনটা পরে যায়, আর কোন সারা শব্দ নেই!
আবির হন্তদন্ত হয়ে বাসায় যায়, দেখে দরজা খোলা।
মুনা মাটিতে পরে আছে অজ্ঞান হয়ে, রাজকুমারীর মত সেজেছিল মেয়েটা....
আবির মুনার মাথাটা কোলে নিয়ে মুখে পানি ছিটালো।
নাহ! মেয়েটার সাথে এভাবে মজা না করলেও পারতো, খুব কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা.....
মুনা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাঁকালো, আবিরকে দেখে পাগলের মত চিৎকার করতে লাগলো, আর আবিরকে ছুয়ে দেখতে লাগল ও ঠিক আছে না।
আবির মুনাকে বলল ওর কিছু হয় নি, ও মজা করেছে তবু মুনা থামলো না।
আবিরের চোখে জল চলে এল, কেউ ওকে এত টা ভালোবাসে?
সত্যিই আবিরের আর কিছুই পাওয়ার নেই, শুধু চায় ভালোবাসা দিয়ে যেন এই পাগলিটাকে বুকের ভেতর আগলে রাখতে পারে....
আবির সে দিন অনেক দুষ্টুমি করে মুনাকে হাসালো, কেক কেটে, খাওয়া দাওয়া করে মুনাকে বুকে নিয়ে ঘুমালো।
মুনাকে বুকে নিয়ে আবির ভাবে, পৃথিবীতে এই মুহুর্তে ওর থেকে বেশি সুখি আর কেউ নেই।
মাঝরাতে মুনার ঘুম ভাঙে, মাথাটা প্রচুর ব্যথা করছে!
ছিড়ে যাচ্ছে শিরাগুলো....
মুনা আবিরকে ডাকে না, খুব কষ্ট হয় ওর।
আবির ওর কাতরোক্তি শুনে উঠে যায়, দেখে প্রচন্ড ব্যাথায় মেয়েটা ছটফট করছে.....
নিজের গাড়ি নিয়ে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দেয়, মুনাকে সুস্থ করে আবির বাসায় নিয়ে আসে।
মুনা আবিরকে বলে, আমিকি মা হবো? কি মজা, আমি মা হবো, তুমি বাবা হবে!
আবির কিছু বলে না, অন্য রুমে যায়।
দরজা বন্ধ করে চিৎকার করে কাঁদে, কিভাবে ও মুনাকে জানাবে সত্যিটা?
ও তো নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না,,,,,যে ছোট বেলা থেকে নিজের শরীরে ক্যান্সার পুষে রেখেছে মেয়ে টা।
এত দিন বুঝতেই পারে নি কোনও ভাবে,,,,,,
আর মাত্র ১মাস বাঁচবে ও।
নিজেকে কিছুতেই বোঝাতে পারে না আবির।
মুনা ছাড়া ও কি ভাবে বেঁচে থাকব?
মুনা কিছু একটা বুঝতে পারে, কিছু বলে না।
মুনার মাও এখন এখানেই থাকে, সেও জানে সব টা।
ধিরে ধিরে মুনার মুখটা কালো হয়ে যেতে থাকে, চোখের নিচে কালি পরে।
খাবার এ অরুচি দেখা যায়, আর মাত্র ৭দিন বাকি মুনার জীবনের।
তখন মুনা লুকিয়ে আবির আর ওর মায়ের কথা শুনে ফেলে!
শুনে চুপচাপ চলে যায় শেখান থেকে।
রাতে আবিরের বুকে মাথা রেখে মুনা বলে, যখন আমি থাকব না তখন তুমি কি অন্য কাউকে বুকে নিবা এই ভাবে?
আবির ভেবে পায় না কি বলবে, কেন এসব বলছো মুনা?
তুমি থাকবে না কেন?
মুনা বলে আমি সব জানি, মৃত্যুতে আমার দুঃখ নেই জান....!
শুধু এক টাই কষ্ট আমার, আমাকে ছাড়া তুমি একা কি ভাবে থাকবা?
তোমার খুব কষ্ট হবে....
বলে মুনা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল, আবিরও কাঁদলো।
ওর যদি শক্তি থাকতো তবে ওর প্রাণের বিনিময়ে মুনার প্রাণ ভিক্ষা চাইত।
মুনা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ল, আবির ওর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাঁকিয়ে আছে......
কি জানি, কবে হয়ত চলে যাবে ওকে একা করে......
রাত ২টা,
মুনার ঘুম ভেঙে যায়,,,,, সে আবিরকে বলে ওর খুব দই খেতে ইচ্ছে করছে।
আবির দেখে ফ্রিজে দই নেই, দৌঁরে নিচে যায়, কোন দোকান খোলা নেই!.
পাগলের মত করতে থাকে আবির, মুনা তার কাছে দই খেতে চাইছে আর ও দিতে পারছে না।
গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়,,,,,অনেক অলি গলি খুঁজে একটা দোকান থেকে দই নিয়ে আসে।
মুনার মাথাটা কোলের উপর রেখে দই খাওয়ায় ওকে।
মুনা হাসি মুখে আবার ঘুমিয়ে যায়, আবির মুনার চুলে হাত বুলাতে থাকে।
আবিরের চোখটাও লেগে আসে,,,,,
রাত ৩.৩০,,,
মুনা অসম্ভব যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকে, আবির কিছুতেই ওকে শান্তনা দিতে পারে না।
মুনা ওর বুকে মুখ লুকিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে, যাবো না!
আমি তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো না!.
আমাকে তোমার বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখো, আমি তোমাকে ছাড়া
থাকতে পারবো না!
আবির শক্ত করে মুনাকে বুকের ভেতর চেপে ধরে, না বাবু আমি তোমাকে কোথাও যেতে দেবো না!
এই যে আমি দেখো, তোমার কোন ভয় নেই।
আমি তোমাকে যেতে দিবো না জান, মৃত্যুর কাছ থেকে তোমায় ছিনিয়ে আনবোই!
বলতে গিয়ে বুকটা ছিঁড়ে যায় আবিরের.....
মুনার মাকে নিয়ে মুনাকে সাথে করে বেরিয়ে যায় হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।
মুনার মাথাটা আবিরের কোলের উপর, এক দৃষ্টিতে দেখছে আবিরকে....
আবির বলে, চিন্তা করোনা জান সব ঠিক হয়ে যাবে।
মুনা বলে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, আমাকে একটু বুকে নিবা?
আবির মুনাকে টেনে বুকের মধ্যে নিল.....
মুনা জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে, কিছু বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না!
আবির ওর মুখের দিকে চেয়ে আছে, বলো মুনা, কি বলবে বলো।
মুনা প্রাণ পণে কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না!
হঠাৎ মুনার শব্দ থেমে যায়,,,,,
মাথাটা আস্তে করে হেলে পরে এক পাশে!
আবির স্তদ্ধ!
মুনা,,,,,এই মুনা,,,,,কি বলতে চাইছিলা তুমি বলো?
আমি শুনবো তো? বলো মুনা?
তুমি চুপ হয়ে গেলে কেন, কথা বলছো না কেন???
সে দিন থেকে মুনা এক বারে চুপ হয়ে যায়, জীবনের ইতি কেটে পারি জমায় অচিন কোন দেশে......
আর আবির???
মুনার কবরের পাশেই শুয়ে বসে সময় কাঁটায়।
কেউ শেখান থেকে নিতে পারে না।
একা একা হাসে, কথা বলে কবরের সাথে।
ওর শুধু একটাই প্রশ্ন, কি বলতে চাইছিল মুনা সে দিন?
কেন ওর শেষ কথাটা শুনতে পারল না আবির?
তাই ও কবরের কাছেই পরে থেকে, মুনার না বলা কথাটা
শোনার জন্য।
ওর ধারণা মুনা ওর কথা শুনতে পায়।
আর এক দিন মুনা সেই কথা টা বলবেই, যেটা না বলেই চলে গেল।
আবির ভাবে,
মুনার কবরে খুব ভয় লাগে, তাই আবির
ওর কবর ছেড়ে কোথাও যায় না।
চিকিৎসা চলছে আবিরের, কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
মুনার মৃত্যুই ওকে বধির বানিয়ে দিয়েছে।।
এটাই হচ্ছে ভালোবাসা, প্রকৃত ভালোবাসা। দেহের মৃত্যু হলেও যার মনের মৃত্যু নেই,,,,,,এই ভালোবাসা অমর।
এই গল্পটি আমি দীর্ঘ ২ দিন যাবৎ অফিসে শত ব্যস্তার সময়ের মাঝে লিখেয়েছি শুধু একটা কারণে এক জনকে বুঝার জন্য সেটা হল সত্যিকারের ভালোবাসা করার জন্য কোন টাকা-পয়সা লাগে না শুধু তার দরকার একটা সুন্দর মন আর একটা মনই পারে ভালোবাসার অনাবিল সুখ দিতে যা আর সুখি হতে অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না......?
কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না।,,(cl)
,,,,,
,,,""'kalponik writer"""
গল্পটা পড়ুন,,,, ,,,,,,,,
ছেলে টা একটা স্কুলের শিক্ষক, নাম আবির। মা বাবা আর ছোট বোন টা থাকে গ্রামের বাড়িতে।
চাকরি করে নিজের পড়াশুনার খরচ চালায় আর মা বাবাকেও টাকা পাঠায়। এক কথায় বলতে গেলে সুখেই আছে।
এক দিন বিকেলে একটা কোচিং সেন্টারের বারান্দায় চোখ আটকে যায় আবিরের। একটি মেয়ে অন্য একটি মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
এত সুন্দর মেয়ে এর আগে কখনও চোখে পড়েনি আবিরের.....
আবির মনে মনে লজ্জিত হয়ে সেখান থেকে চলে গেল, কিন্তু মেয়েটির মুখটা কিছুতেই ভুলতে পারল না!
পরের দিন আবার গিয়ে দাঁড়ালো সেই কোচিং সেন্টারের কাছে।
গিয়ে দেখে মেয়েটা একা একা দাঁড়িয়ে কাঁদছে......
সাহস করে আবির কাছে গেল, গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল।
মুনা ওকে দেখেই ভয় পেয়ে যায়।
কারণ মুনা জানে ও এক জন শিক্ষক।
মুনা চলে যেতে চায়, কিন্তু আবির ওকে বলে ও কেন কাঁদছে....
প্রথমে মুনা বলতে চায় না, কিন্তু আবিরের অনুরোধ এ বলে....
মুনার বাবা নেই, ওর মা দর্জির কাজ করে সংসার চালায়।
আত্নিয় স্বজন আছে অনেক ধনী, কিন্তু তারা ওদের খোঁজ নেয় না।
এই পৃথিবী টা ওর কাছে অন্ধকার লাগে,,,,,ওর মা অনেক কষ্টে ওকে পড়াশোনা করাচ্ছে।
কিন্তু সামনে এস এস সি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ।
অনেক টাকার প্রয়োজন, কিন্তু মুনার মায়ের কাছে এত টাকা নেই।
ওর হয়ত আর পরীক্ষা দেয়া হবে না,,,,, কিন্তু ও আরো পড়তে চায়।
আবির ওর সব কথা শুনলো, তার পর ওকে বলল আবিরকে ওদের বাসায় নিয়ে যেতে।
মুনা আবিরকে ওর মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, মা আবির কে দেখে খুব খুশি হলো।
কারণ তিনি তার মেয়ের জামাই বানানোর জন্য যেমন ছেলে খুঁজছিল, আবির তেমনই।
কিন্তু মুনার মনে এমন কিছুই নেই।
আবির ওদের বলল, ওদের যদি কোন আপত্তি না থাকে তবে আবির মুনাকে পড়াবে।
আর মুনার পড়ার খরচ দেবে।
শুরুতে ওরা মানতে চাইল না, কিন্তু পরে রাজি হয়ে গেল।
কারণ পৃথিবিতে বেঁচে থাকতে হলে সবারই একটা অবলম্নন দরকার, আবির না হয় তাই হলো।
আবির রোজ সন্ধ্যায় পড়াতে আসতো, মুনা খুবই ভাল ছাত্রী ছিল।
সব পড়াই মন দিয়ে পড়ত, আর মন দিয়ে বুঝতো।
পড়া ছাড়া অন্য কোন দিকে মন ছিল না মুনার, মাঝে মাঝে নিজের হাতে এটা ওটা রাঁন্না করে খাওয়াতো ও আবিরকে।
আর আবির সেই ছোট্ট মেয়েটার প্রেমে ডুবতে লাগল অল্প অল্প করে.....
দেখতে দেখতে পরীক্ষা চলে এলো, আবির প্রতিদিন মুনাকে হলে নিয়ে যেত, আর পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে থাকতো।
তত দিনে আবির মাস্টার্স শেষ করে, ভালো একটা ফার্মে চাকরি পেয়ে যায়।
মুনার জন্য সে প্রতিদিন ছুটি নিতো, কারণ পরীক্ষা শেষে বাইরে বেরিয়ে শুধু আবিরকেই খুঁজতো মুনার চোখ দুটো.....
দুজন মিলে বাইরে খাওয়া দাওয়া করে মায়ের জন্য খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরতো ওরা।
দেখতে দেখতে দুজন দুজনার খুব কাছে চলে এলো, আবিরের চোখের মায়া মুনাকে শুধু টানতে থাকে ওর দিকে....
আর আবিরও অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে মুনার দিকে, কিন্তু কিছু বলে না।
হঠাৎ একদিন মুনাকে দেখতে একজন মহিলা আসে, তার ছেলের বউ বানাবে।
মুনার মনটা খারাপ হয়ে যায়,,,,,কারণ সে এত দিনে আবির কে অনেক ভালোবেসে ফেলছে।
কিন্তু ও তো কখনও আবিরকে সেটা বলতে পারবে না, কারণ ওরা গরিব।
আর আবির ওদের জন্য এত দিন যা করেছে তাতে আবিরের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ ওরা।
আর এই কথা আবিরকে জানালে আবির ওকে খুব খারাপ ভাববে।
তাই মুনা আর বলে না, মনে মনে খুব কষ্ট পায়। কিন্তু বিয়েতে রাজি হয়ে যায়।
ছেলের মা ওকে খুব পছন্দ করে আংটি পড়িয়ে যায়।
এক সপ্তাহ পর বিয়ে....
ওরা ছেলেকে দেখে নি, ছেলে নাকি খুব ব্যস্ত তাই আসতে পারবে না।
মুনার খুব রাগ হলো, তাই ছবিও দেখল না আর।
কিন্তু মুনার মা দেখল......
বাসর ঘরে মুনা একা,,,,, চারিদিক নিরব নিস্তদ্ধ।
কোনো মানুষ নেই, অনেক বড় একটা ঘর সুন্দর করে সাজানো।।
ফুলের গঁন্ধে চারিদিক মৌ মৌ করছে....
দেখে খুব ভালো লাগছে মুনার, কিন্তু আবিরের কথা মনে হতেই মুখটা কালো হয়ে গেল ওর।
চুপটি করে বসে রইল।
একটু পরে দরজা খোলার আওয়াজ হলো, মুনার বুকের ভেতর টা ধক করে উঠল!
লোক টা এসে পিছন থেকে ওর চোখ চেপে ধরল,,,,,ও কিছুই বুঝতে পারল না!
আস্তে আস্তে ওকে খাট থেকে নামিয়ে নিয়ে গেল, চোখ থেকে হাত টা সরাতেই মুনার চোখ মুখ চকচক করতে লাগল,,,,,
সে এ কাকে দেখছে! এ তো আবির....! মুনা কিছু বলতে পারল না, চোখ থেকে আনন্দের অশ্রু ঝরছে!
ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার আনন্দ,,,,,একান্ত কাছে।
আবির এবার মুনাকে কোলে নিয়ে খাটে বসাল, সারপ্রাইজ টা কেমন হলো জানতে চাইলে মুনা ওকে জরিয়ে ধরে শুধু কাঁদলো আর বলল,,,,,এমনটা কেউ করে?
এভাবেই ওদের সুখের সংসার চলতে লাগল।
অনেক বড় ফ্লাটে মাত্র দুজনার মিষ্টি সংসার।
মুনা আবির কে অনেক ভালোবাসতো, সম্মান করতো।
আবির মুখ থেকে কিছু বের করার আগেই মুনা সেটা এনে হাজির করত।
আর আবিরও মুনার প্রেমে অন্ধ ছিল, মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করত এমন বউ পাওয়ার জন্য।
মুনার এস এস সি রেজাল্ট খুব ভালো হলো, আবির ওকে ভর্তি করাতে চাইল কিন্তু মুনা আর ভর্তি হলো না।
ওর অনেক স্বপ্ন একটা বাচ্চার মা হয়ে, আনন্দে সংসার করবে।
আবিরও আর জোর করে না, কারণ স্বামী হিসেবে আবির মুনার কোনো অভাব রাখে নি।
এক দিন আবিরের জন্মদিন ছিল, সে দিন মুনা ওকে বলে দিছে ও যেন একটু তারাতারি আসে।
আবিরও বলছে যত তারাতারি সম্ভব ও চলে আসবে.....
মুনা আবিরের সব পছন্দের খাবার রাঁন্না করল, সুন্দর করে ঘর টা সাজালো।
আর আবিরের পছন্দের শাড়ীটা পড়ল।
কিন্তু আবির আসছে না!
মুনা ফোন দিল, আবির ফোন ধরল না!
আশ্চর্য,,,,বিয়ের এত দিন হলো কখনও এমন হয় নি।
আবির যত ব্যস্তই থাকুক মুনার ফোন সে ধরবেই।
কিন্তু আজ বার বার ফোন দেয়ার পরও ধরছে না।
মুনার খুব চিন্তা হতে লাগল....
অস্থির হয়ে যাচ্ছে ও।
শীতের মধ্যেও ঘেমে উঠছে বার বার।
হঠাৎ আবিরের নাম্বার থেকে ফোন আসে, মুনা রিসিভ করতেই দেখে অন্য একটা ছেলে!
বলে আবির অফিস থেকে ফেরার সময় আ্যক্সিডেন্ট করছে, হাসপাতালে নেয়া হইছিল সামান্য আঘাত পাইছে, এখন বাসায় আসছে।
মুনার হাত থেকে ফোনটা পরে যায়, আর কোন সারা শব্দ নেই!
আবির হন্তদন্ত হয়ে বাসায় যায়, দেখে দরজা খোলা।
মুনা মাটিতে পরে আছে অজ্ঞান হয়ে, রাজকুমারীর মত সেজেছিল মেয়েটা....
আবির মুনার মাথাটা কোলে নিয়ে মুখে পানি ছিটালো।
নাহ! মেয়েটার সাথে এভাবে মজা না করলেও পারতো, খুব কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা.....
মুনা আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাঁকালো, আবিরকে দেখে পাগলের মত চিৎকার করতে লাগলো, আর আবিরকে ছুয়ে দেখতে লাগল ও ঠিক আছে না।
আবির মুনাকে বলল ওর কিছু হয় নি, ও মজা করেছে তবু মুনা থামলো না।
আবিরের চোখে জল চলে এল, কেউ ওকে এত টা ভালোবাসে?
সত্যিই আবিরের আর কিছুই পাওয়ার নেই, শুধু চায় ভালোবাসা দিয়ে যেন এই পাগলিটাকে বুকের ভেতর আগলে রাখতে পারে....
আবির সে দিন অনেক দুষ্টুমি করে মুনাকে হাসালো, কেক কেটে, খাওয়া দাওয়া করে মুনাকে বুকে নিয়ে ঘুমালো।
মুনাকে বুকে নিয়ে আবির ভাবে, পৃথিবীতে এই মুহুর্তে ওর থেকে বেশি সুখি আর কেউ নেই।
মাঝরাতে মুনার ঘুম ভাঙে, মাথাটা প্রচুর ব্যথা করছে!
ছিড়ে যাচ্ছে শিরাগুলো....
মুনা আবিরকে ডাকে না, খুব কষ্ট হয় ওর।
আবির ওর কাতরোক্তি শুনে উঠে যায়, দেখে প্রচন্ড ব্যাথায় মেয়েটা ছটফট করছে.....
নিজের গাড়ি নিয়ে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দেয়, মুনাকে সুস্থ করে আবির বাসায় নিয়ে আসে।
মুনা আবিরকে বলে, আমিকি মা হবো? কি মজা, আমি মা হবো, তুমি বাবা হবে!
আবির কিছু বলে না, অন্য রুমে যায়।
দরজা বন্ধ করে চিৎকার করে কাঁদে, কিভাবে ও মুনাকে জানাবে সত্যিটা?
ও তো নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না,,,,,যে ছোট বেলা থেকে নিজের শরীরে ক্যান্সার পুষে রেখেছে মেয়ে টা।
এত দিন বুঝতেই পারে নি কোনও ভাবে,,,,,,
আর মাত্র ১মাস বাঁচবে ও।
নিজেকে কিছুতেই বোঝাতে পারে না আবির।
মুনা ছাড়া ও কি ভাবে বেঁচে থাকব?
মুনা কিছু একটা বুঝতে পারে, কিছু বলে না।
মুনার মাও এখন এখানেই থাকে, সেও জানে সব টা।
ধিরে ধিরে মুনার মুখটা কালো হয়ে যেতে থাকে, চোখের নিচে কালি পরে।
খাবার এ অরুচি দেখা যায়, আর মাত্র ৭দিন বাকি মুনার জীবনের।
তখন মুনা লুকিয়ে আবির আর ওর মায়ের কথা শুনে ফেলে!
শুনে চুপচাপ চলে যায় শেখান থেকে।
রাতে আবিরের বুকে মাথা রেখে মুনা বলে, যখন আমি থাকব না তখন তুমি কি অন্য কাউকে বুকে নিবা এই ভাবে?
আবির ভেবে পায় না কি বলবে, কেন এসব বলছো মুনা?
তুমি থাকবে না কেন?
মুনা বলে আমি সব জানি, মৃত্যুতে আমার দুঃখ নেই জান....!
শুধু এক টাই কষ্ট আমার, আমাকে ছাড়া তুমি একা কি ভাবে থাকবা?
তোমার খুব কষ্ট হবে....
বলে মুনা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল, আবিরও কাঁদলো।
ওর যদি শক্তি থাকতো তবে ওর প্রাণের বিনিময়ে মুনার প্রাণ ভিক্ষা চাইত।
মুনা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ল, আবির ওর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাঁকিয়ে আছে......
কি জানি, কবে হয়ত চলে যাবে ওকে একা করে......
রাত ২টা,
মুনার ঘুম ভেঙে যায়,,,,, সে আবিরকে বলে ওর খুব দই খেতে ইচ্ছে করছে।
আবির দেখে ফ্রিজে দই নেই, দৌঁরে নিচে যায়, কোন দোকান খোলা নেই!.
পাগলের মত করতে থাকে আবির, মুনা তার কাছে দই খেতে চাইছে আর ও দিতে পারছে না।
গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়,,,,,অনেক অলি গলি খুঁজে একটা দোকান থেকে দই নিয়ে আসে।
মুনার মাথাটা কোলের উপর রেখে দই খাওয়ায় ওকে।
মুনা হাসি মুখে আবার ঘুমিয়ে যায়, আবির মুনার চুলে হাত বুলাতে থাকে।
আবিরের চোখটাও লেগে আসে,,,,,
রাত ৩.৩০,,,
মুনা অসম্ভব যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকে, আবির কিছুতেই ওকে শান্তনা দিতে পারে না।
মুনা ওর বুকে মুখ লুকিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে, যাবো না!
আমি তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো না!.
আমাকে তোমার বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখো, আমি তোমাকে ছাড়া
থাকতে পারবো না!
আবির শক্ত করে মুনাকে বুকের ভেতর চেপে ধরে, না বাবু আমি তোমাকে কোথাও যেতে দেবো না!
এই যে আমি দেখো, তোমার কোন ভয় নেই।
আমি তোমাকে যেতে দিবো না জান, মৃত্যুর কাছ থেকে তোমায় ছিনিয়ে আনবোই!
বলতে গিয়ে বুকটা ছিঁড়ে যায় আবিরের.....
মুনার মাকে নিয়ে মুনাকে সাথে করে বেরিয়ে যায় হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।
মুনার মাথাটা আবিরের কোলের উপর, এক দৃষ্টিতে দেখছে আবিরকে....
আবির বলে, চিন্তা করোনা জান সব ঠিক হয়ে যাবে।
মুনা বলে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, আমাকে একটু বুকে নিবা?
আবির মুনাকে টেনে বুকের মধ্যে নিল.....
মুনা জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে, কিছু বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না!
আবির ওর মুখের দিকে চেয়ে আছে, বলো মুনা, কি বলবে বলো।
মুনা প্রাণ পণে কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না!
হঠাৎ মুনার শব্দ থেমে যায়,,,,,
মাথাটা আস্তে করে হেলে পরে এক পাশে!
আবির স্তদ্ধ!
মুনা,,,,,এই মুনা,,,,,কি বলতে চাইছিলা তুমি বলো?
আমি শুনবো তো? বলো মুনা?
তুমি চুপ হয়ে গেলে কেন, কথা বলছো না কেন???
সে দিন থেকে মুনা এক বারে চুপ হয়ে যায়, জীবনের ইতি কেটে পারি জমায় অচিন কোন দেশে......
আর আবির???
মুনার কবরের পাশেই শুয়ে বসে সময় কাঁটায়।
কেউ শেখান থেকে নিতে পারে না।
একা একা হাসে, কথা বলে কবরের সাথে।
ওর শুধু একটাই প্রশ্ন, কি বলতে চাইছিল মুনা সে দিন?
কেন ওর শেষ কথাটা শুনতে পারল না আবির?
তাই ও কবরের কাছেই পরে থেকে, মুনার না বলা কথাটা
শোনার জন্য।
ওর ধারণা মুনা ওর কথা শুনতে পায়।
আর এক দিন মুনা সেই কথা টা বলবেই, যেটা না বলেই চলে গেল।
আবির ভাবে,
মুনার কবরে খুব ভয় লাগে, তাই আবির
ওর কবর ছেড়ে কোথাও যায় না।
চিকিৎসা চলছে আবিরের, কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
মুনার মৃত্যুই ওকে বধির বানিয়ে দিয়েছে।।
এটাই হচ্ছে ভালোবাসা, প্রকৃত ভালোবাসা। দেহের মৃত্যু হলেও যার মনের মৃত্যু নেই,,,,,,এই ভালোবাসা অমর।
এই গল্পটি আমি দীর্ঘ ২ দিন যাবৎ অফিসে শত ব্যস্তার সময়ের মাঝে লিখেয়েছি শুধু একটা কারণে এক জনকে বুঝার জন্য সেটা হল সত্যিকারের ভালোবাসা করার জন্য কোন টাকা-পয়সা লাগে না শুধু তার দরকার একটা সুন্দর মন আর একটা মনই পারে ভালোবাসার অনাবিল সুখ দিতে যা আর সুখি হতে অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না......?
কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না।,,(cl)
,,,,,
,,,""'kalponik writer"""
কমেন্টে অবশ্যই করবেন কেমন লাগছে।
Comments
Post a Comment